জনাব সাবের হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ৫ বারের নির্বাচিত একজন সাবেক সংসদ সদস্য। ১৯৯৬ সালে তিনি প্রথম বার সবুজবাগ ও মতিঝিল থানা নিয়ে ঢাকা-৬ সংসদীয় আসন এবং পরবর্তীতে ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা থানা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৯ সংসদীয় আসন থেকে টানা ৪ বার সংসদ সদস্য হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভায় তিনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সাবের হোসেন চৌধুরী ইতিপূর্বে ১৯৯৯ সালে তিনি প্রথমে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রীসভায় অন্তর্ভুক্ত হন এবং পরবর্তীতে সফলতার সাথে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
প্রথম এবং একমাত্র বাংলাদেশী হিসেবে ২০১৪-২০১৭ সালে তিনি সর্বপ্রথম জেনেভা ভিত্তিক ইন্টার-পার্লামেন্টারী ইউনিয়ন (আইপিইউ) এর ২৮ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিশ্বব্যাপী শান্তি ও গণতন্ত্রে তার অসামান্য অবদানের প্রেক্ষিতে সংস্থাটি তাকে আজীবন সম্মানিত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব প্রদান করেন। ইন্টার-পার্লামেন্টারী ইউনিয়নে ১৭৯ টি দেশের জাতীয় সংসদ সমূহের ৪৫,০০০ সদস্য রয়েছে যারা বিশ্বের ৬.৫ বিলিয়ন মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত, আইপিইউ মূলত বিশ্বের মহান জাতীয় সংসদ ভিত্তিক একটি সংগঠন, যা বিশ্বব্যাপী কার্যকরি সংসদ এবং শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সংলাপের আয়োজন করে।
জনাব চৌধুরী জাতীয় সংসদ, মন্ত্রী পরিষদ, রাজনৈতিক দল এবং ক্রীড়া প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এখনও করে যাচ্ছেন। তিনি ২০০১-২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক-১ হিসেবে ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সভাপতি, তৎকালীণ বিরোধী দলীয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তার সফল নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের পূর্ণ সদস্যপদ/টেস্ট মর্যাদা অর্জন করে। তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালনকালীণ সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হয় এবং জনাব চৌধুরীকে বিশ্ব ক্রিকেটে তার অবদানের জন্য এমসিসির সম্মানসূচক আজীবন সদস্যপদ দেওয়া হয়।
একজন আইনপ্রণেতা হিসেবে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষা ও উন্নয়নের জন্য (সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৮ এর ক) তিনি বাংলাদেশের সংবিধানে একটি নতুন বিধানের প্রস্তাব করেন। এছাড়াও তার সদয় হস্তক্ষেপ ও প্রস্তাবনায় কয়েদি নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু নিষিদ্ধকরণ আইন মহান জাতীয় সংসদে পাশ হয়েছে। পাশাপাশি কুষ্ঠরোগীদের সমাজ থেকে পৃথককরণ বাতিল এবং স্বাভাবিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ‘কুষ্ঠরোগী আইন’ মহান জাতীয় সংসদে পাশ হয়েছে।
জনাব চৌধুরীর অসীম অবদানে জলবায়ু পরিবর্তনে অস্তিত্ব সংকটের তীব্রতা এবং দুর্যোগের পুনরাবৃত্তি হাইলাইট, সম্পদের স্থায়িত্ব, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি, খাদ্য নিরাপত্তা, সমুদ্রপৃষ্ঠে পানির চাপ বৃদ্ধির কারণে গ্রহজনিত জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রস্তাব করেন।
তিনি লন্ডন ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ থেকে রাজনীতি এবং অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি ওয়েস্টমিনিস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ের উপর ডিপ্লোমা লাভ করেছেন এবং যুক্তরাজ্যের বারে প্রবেশের জন্য একাডেমিক পর্যায় সম্পন্ন করেছেন।
একজন সক্রিয় সংসদ সদস্য হিসেবে, জনাব সাবের হোসেন চৌধুরী একাদশ জাতীয় সংসদে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সম্মানিত সভাপতি এবং পরিকল্পনা মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য ছিলেন। একই সাথে ২০২৩ সালের জুন মাসে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে বৈশ্বিক জলবায়ু আলোচনায় বাংলাদেশ ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ও অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন করেছেন।